Wellcome to National Portal
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৫ মার্চ ২০২৪

ইতিহাস ও কার্যাবলি

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস:

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছা ও পরিবর্তনশীল সমাজের চাহিদা পূরণের স্বার্থে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন এবং বিদ্যমান আইনের সংশোধন একটি অত্যাবশ্যক ও অব্যাহত প্রক্রিয়া। স্বাধীনতাপরবর্তী সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিবর্তনের সাথে সাথে সময়োপযোগী আইন প্রণয়নের আবশ্যকতা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইনের প্রস্তাব সংবলিত সকল বিল, অধ্যাদেশ, বিধি, প্রবিধান, প্রজ্ঞাপন, ইত্যাদির খসড়া প্রস্তুতির পর্যায়ে পরামর্শ প্রদানসহ চূড়ান্ত রূপদান, সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের সাথে উন্নয়ন সহযোগী, দাতা সংস্থা, ইত্যাদির অনুদান ও ঋণ চুক্তির উপর আইনগত মতামত এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সাথে সম্পাদিতব্য ট্রিটি, কনভেনশন, ইত্যাদির উপর মতামত প্রদান লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের কর্মপরিধিভুক্ত। এছাড়া, আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য সরকারের সকল নীতিনির্ধারণী বিষয় নিরীক্ষা, প্রচলিত আইন, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, ইত্যাদি বাংলা হতে ইংরেজি অথবা ইংরেজি হতে বাংলায় অনুবাদ, আইনের রিভিশন ও হালনাগাদকরণ, প্রকাশনা, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ বিভাগ কর্তৃক সম্পাদিত হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই আধুনিক ও দক্ষ লেজিসলেটিভ কর্মকর্তা সৃষ্টিসহ গুণগত মানসম্পন্ন আইন প্রণয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক মেমোরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তখন পর্যন্ত লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিষয়ে দক্ষ জনবল সৃষ্টির প্রতি নজর না দেওয়ায় এ কাজে অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনবলের অভাব ছিল। কারণ উপসচিব ও সহকারী সচিব পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণের মধ্য হতে প্রেষণে নিযুক্ত হয়ে দুই-তিন বছর কাজ করার পর তাঁরা আদালতে বা অন্যত্র বদলি হয়ে যেতেন। তদস্থলে আবার একই প্রক্রিয়ায় নতুন করে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ প্রেষণে নিযুক্ত হতেন। স্থায়ীভাবে নিয়োজিত দক্ষ কর্মকর্তা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ১৬/১০/১৯৯৬ খ্রি. তারিখে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মাননীয় মন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এতৎসংক্রান্ত প্রস্তাবটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উপস্থাপিত হয়। উক্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং উইং নামে একটি স্বতন্ত্র  উইং ও উহার নিজস্ব জনবল সৃষ্টির লক্ষ্যে সার-সংক্ষেপ অনুমোদন করেন। ফলশ্রুতিতে তাৎক্ষণিকভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং উইং নামে পৃথক একটি উইং সৃষ্টি হয় এবং এর কার্যক্রম শুরু হয়। বস্তুত আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ গঠনের প্রাথমিক ভিত্তি তৎকালীন সময়ে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতেই সূচিত হয়।

স্থায়ী কর্মকর্তা নিয়োগের লক্ষ্যে লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং কর্মকর্তা (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৮ প্রণীত হয়। এতে করে কার্যত একটি বিশেষায়িত টেকনিক্যাল লেজিসলেটিভ সার্ভিস সৃজিত হয়েছে। অতঃপর আইন ও বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের লক্ষ্যে Legal and Judicial Capacity Building Project গৃহীত হয়। উক্ত প্রকল্পে লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং উইং-কে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার কর্মসূচি গৃহীত হয়েছিল।

উপরি-উক্ত প্রকল্প বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন ঋণচুক্তি (Development Credit Agreement) সম্পাদিত হয়েছিল। প্রকল্প সম্পর্কিত কৌশলপত্রে এবং বিশ্বব্যাংকের সংশ্লিষ্ট PROJECT APPRAISAL DOCUMENT-এ লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং উইংকে পরিপূর্ণ ডিভিশনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনার পাশাপাশি লেজিসলেটিভ সার্ভিসকে ক্যাডারে রূপান্তর করার সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিল।

কানাডা সরকারের অনুদানে উহার আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা সিডা (CIDA)-এর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত Legal Reform Project (Part-A)শীর্ষক প্রকল্পের অধীন লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং উইং এর প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং উক্ত প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য ছিল লেজিসলেটিভ উইং-কে পূর্ণাঙ্গ ডিভিশনে উন্নীতকরণ এবং লেজিসলেটিভ সার্ভিসকেক্যাডারে রূপান্তর করে প্রয়োজনীয় সকল কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বমানে উন্নীত করা। প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট Vision Paper এবং Management Plan-এ যার প্রতিফলন ছিল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর বিভাগ প্রতিষ্ঠার কাজটি গুরুত্ব পায় এবং সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বিগত ২৩/১২/২০০৯ খ্রি. তারিখে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ সৃষ্টি হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদের অধীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সরকারি কার্যাবলি বণ্টন ও পরিচালনার জন্য প্রণীত Rules of Business, 1996-এর SCHEDULE-I অর্থাৎ Allocation of Business Among the Different Ministries and Divisions অনুযায়ী লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ উহার অনুকূলে বণ্টনকৃত দায়িত্বাবলি পালন করছে।

 

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের কার্যাবলি:

Rules of Business, 1996 এর Rule 14A

14A. লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সহিত পরামর্শ।-

(১) নিম্নবর্ণিত বিষয়ে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সহিত পরামর্শ করিতে হইবে:-

(ক)   আইন-প্রণয়ন সংক্রান্ত সকল প্রস্তাবসম্পর্কে;

(খ)   আইন-প্রণয়ন সংক্রান্ত যেকোনো প্রস্তাব হইতে উদ্ভূত সকল আইনগত প্রশ্নে;

(গ)   গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি, আন্তর্জাতিক এগ্রিমেন্ট ও কনভেনশন প্রস্তুত এবং আন্তর্জাতিক আইন ঘোষণা ও সংশোধন সম্পর্কে;

(ঘ)  যে কোনো আইনের ব্যাখ্যা প্রদান সম্পর্কে; এবং

(ঙ)   সংবিধিবদ্ধ ক্ষমতা প্রয়োগ করিয়া বিধিমালা, প্রবিধানমালা বা উপ-আইন, ইত্যাদি জারি বা জারির ক্ষমতা প্রদানের পূর্বে।

(২) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মাধ্যম ব্যতীত এবং এই বিভাগ কর্তৃক প্রণীত কার্যপ্রণালি অনুসরণ ব্যতীত, কোনো মন্ত্রণালয় অ্যাটর্নি-জেনারেলের সহিত পরামর্শ করিবে না।

(৩) অ্যাটর্নি-জেনারেল এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মধ্যে কোনো বিষয়ে দ্বিমত থাকিলে, সিদ্ধান্তের জন্য উক্ত বিষয়টি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করিতে হইবে।

Rules of Business, 1996 এরSchedule-I(Allocation of Business among the different Ministries and Divisions)-এ লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের নিকট অর্পিত বিদ্যমান কার্য তালিকা:-

১. সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতরকে আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রস্তাব হইতে উদ্ভূত সকল আইনগত ও সাংবিধানিক প্রশ্নে এবং উক্ত প্রস্তাবের সহিত সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনসহ সংবিধানও যেকোনো আইনের ব্যাখ্যা সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান।

২. সকল প্রকারের বিল, অধ্যাদেশ, সাংবিধানিক আদেশ, সংবিধিবদ্ধ আদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, উপ-আইন, সিদ্ধান্ত-প্রস্তাব, প্রজ্ঞাপন, আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন যেকোনো প্রথা বা রীতি এবং অন্যান্য আইনগত দলিলের খসড়া প্রণয়ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উহার উপর মতামত প্রদান।

৩. আন্তর্জাতিক চুক্তি, এগ্রিমেন্ট, অঙ্গীকার, সমঝোতা-স্মারক ও অন্যান্য আইনগত দলিলসহ সকল প্রকারের চুক্তি ও এগ্রিমেন্টের খসড়া প্রণয়ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উহার উপর মতামত প্রদান।

৪. আন্তর্জাতিক ট্রিটি, কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক আইনগত বিষয়াদি এবং আন্তর্জাতিক ট্রিটি, চুক্তি, ইত্যাদি হইতে উদ্ভূত আন্তর্জাতিক সালিশ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান।

৫. সকল আইন ও সংবিধিবদ্ধ অন্যান্য বিধিমালা ও আদেশের অনুবাদ।

৬. সরকারি আইন প্রকাশনার গ্রন্থস্বত্ব।

৭. আইন, অধ্যাদেশ ও সাংবিধানিক আদেশ এবং অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ আদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা ও অন্যান্য আইনগত দলিলের প্রকাশনা।

৮. আইন, অধ্যাদেশ ও সাংবিধানিক আদেশ এবং সংবিধিবদ্ধ আদেশ, বিধিমালাও প্রবিধানমালার বাংলায় অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠের প্রকাশনা।

৯. বিদ্যমান আইন ও অধ্যাদেশ এবং সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রপতির আদেশ এবং অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ আদেশ ও প্রবিধানমালার সংকলন ও প্রকাশনা।

১০. আইনসমূহ সংহিতাবদ্ধকরণ, সংহতকরণ, অভিযোজন এবং প্রায়োগিক সংশোধন।

১১. লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং এবং অনুবাদ কর্মকর্তাগণের পদায়ন, বদলি, প্রেষণ, ইত্যাদি।

১২. লেজিসলেটিভ ড্রাফটিংকর্মকর্তা এবং এই বিভাগে নিয়োজিত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ।

১৩. এই বিভাগের অধস্তন অফিস ও সংস্থাসমূহের প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রণ।

১৪. আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সহিত যোগাযোগ এবং এই বিভাগের উপর অর্পিত বিষয়ে অন্যান্য দেশ ও বিশ্ব সংস্থাসমূহের সহিত সম্পাদিত ট্রিটি ও এগ্রিমেন্ট সম্পর্কিত বিষয়াদি।

১৫. সংসদ সংশ্লিষ্ট বিষয়, যদি আবশ্যক হয়।

১৬. এই বিভাগের উপর অর্পিত যেকোনো বিষয়ের অনুসন্ধান ও পরিসংখ্যান।

১৭. আদালতে গৃহীত ফি ব্যতীত,  এই বিভাগের উপর অর্পিত যেকোনো বিষয়ের ফি সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি।

১৮. মানবাধিকার এবং মানবাধিকার কমিশন সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি।

১৯. ন্যায়পালের কার্যালয়।

২০. নির্বাচন কমিশনের আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত সকল বিষয়।

২১. আইন কমিশন এবং আইনগত বিষয়াদি সম্পর্কিতকমিশন।

২২. আইন সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়াদি।

২৩. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেল সংক্রান্ত প্রশাসন।

২৪. আর্থিক বিষয়াদিসহ সাচিবিক প্রশাসন।

২৫. সরকারের সকল আইনের গ্রন্থস্বত্ব সংক্রান্ত প্রশাসন।

২৬. এই বিভাগের উপর অর্পিত বিষয়াদি সংক্রান্ত আইনসমূহ।